রবিবার, ১০ মে, ২০২০

লকডাউন বৃদ্ধি না প্রত্যাহার কঠিন সিদ্ধান্তের মুখে ভারতবাসী ।

ভারত নিউজ - কেন্দ্রের লকডাউন শেষ হচ্ছে আগামী  সতেরোই মে, আরো বাড়তে পারে না লকডাউন এবার প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে জানার জন্য আরোও দু চারদিন অপেক্ষা করতে হবে কিন্তু কোনটা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে বৃদ্ধি করা না প্রত্যাহার করা কার্যতঃ ভারতবাসী এবং ভারত সরকার উভয়ের কাছে এটা একটা উভয় সংকট। এতো কঠিন সিদ্ধান্ত গত কয়েক দশকে কোন সরকারকে নিতে হয়েছে কিনা জানা নেই । 
        এক্ষেত্রে দেশবাসীর মতামতটা খুব গুরুত্বপূর্ণ আর দেশবাসীর কাছে এটা একটা কঠিন সিদ্ধান্ত। জোর করে যদি লকডাউন প্রত্যাহার করা হয় আগের মত বাজারহাট খুলবে,  অফিস, কারখানা খুলবে, বাস চলবে। অর্থনীতি, রুজি রোজগার সচল হবে।  মূলত মানুষের জীবিকা, রুজি রোজগারের জন্য লকডাউন প্রত্যাহার করাটা এখন খুবই জরুরী কিন্তু যদি এমন হয় অর্থনীতি বাঁচাতে গিয়ে করোনা ভাইরাস ব্যাপকভাবে সংক্রমিত হলো। ভগবান না করুন, উপরওয়ালা না করুন মহামারীটা ব্যাপক মহামারীতে পরিণত হল কারণ সবচেয়ে বড় বিপদ মানুষের সাথে মানুষের সংস্পর্শে। ভারতবর্ষের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশে জীবনযাপন স্বাভাবিক হয়ে যাওয়া মানেই তো সর্বত্র বিপুল জমায়েত, ট্রেনে বাসে ভিড়ে চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে যাতায়াত।  সেক্ষেত্রে রুজি-রোজগার বাঁচাতে গিয়ে যদি দেশবাসীর প্রাণ সংশয় দেখা দেয় তখন তো এই প্রশ্নটাই সবাই করবে সরকার কেন এত তাড়াতাড়ি লকডাউন প্রত্যাহার করে নিল যেখানে বিশ্বের অনেক দেশ লকডাউন বাড়াচ্ছে।  মানুষ বলতেই পারে কেউ দাবি করতেই পারে কিন্তু সরকারকে পরিস্থিতি অনুযায়ী কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে যেহেতু এখনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি সেহেতু পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে সামলাবে কি করে !  তাছাড়া এত বড় দেশে যেখানে বিপুল জনসংখ্যা, বহু মানুষ অশিক্ষা, দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করে সেখানে সমস্ত মানুষ সচেতন হয়ে রাস্তায় বেরোবে এমন আশা করা দিবাস্বপ্ন। 
        এখন লকডাউন চলছে তাতেও বহু মানুষ বেপরোয়াভাবে রাস্তায় বেরোচ্ছে। ধরে নিলাম আশি শতাংশ মানুষ সচেতনভাবে রাস্তায় বেরোবে কুড়ি শতাংশ মানুষ নিয়ম কানুন না মেনে রাস্তায় বেরোবে কিন্তু এটা এমন একটা রোগ পাঁচ শতাংশ পজিটিভ রোগী পঁচানব্বই শতাংশ সুস্থ মানুষকে সংক্রমিত করে ফেলতে পারে। যদি লকডাউন বর্ধিত করা হয় তাহলে কি হতে পারে, করোনা পজিটিভ এর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে এইভাবে কিছু বাড়তে পারে তবে ব্যাপকভাবে সংক্রমিত করতে পারবেনা, চূড়ান্ত মহামারীর পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছবেনা আশা করা যায়। কিন্তু অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, অসংগঠিত ক্ষেত্রে জীবন-জীবিকা ইতিমধ্যেই সংকটের পর্যায়ে চলে গিয়েছে তাদের কিভাবে চলবে। সরকার কিছুদিন রেশনে চাল, ডাল, আটা দিল কিন্তু রেশনের খাদ্যে তো দীর্ঘদিন মানুষের সংসার চলবেনা তারজন্য নিয়মিত আয় করা দরকার। সরকার নাহলে কিছু নগদ সাহায্য করল কিন্তু তাও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হবে।  ডাক্তারের চেম্বার, নার্সিংহোম বন্ধ।  করোনা ছাড়াও মানুষের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা আছে। ক্যান্সার রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছে না, কিডনির ডায়ালিসিস বন্ধ, ব্লাড ব্যাংকে রক্ত সংকট,  মানুষের চলবে কিভাবে! 
      তাহলে এখন করনীয় কি, বড্ড কঠিন সিদ্ধান্ত! মানুষ যদি দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করতে দৃঢ় সংকল্প হয় তাহলে হয়তো সরকার লকডাউন আরোও কিছুদিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত  নিতে পারে। এখন সবকিছু নির্ভর করছে মানুষের মতামত, সরকারের বড় বড় মাথা তাদের সিদ্ধান্ত, চিকিৎসক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পর্যবেক্ষণ প্রভৃতির ওপর। আর কিছু ছাড় কিছু খোলা অর্থাৎ মধ্যপন্থা নীতিতে চললে সকল দেশবাসীর সুরাহা হবেনা। মানুষ কি পারবে,  নিয়ম কানুন মেনে রাস্তায় বেরিয়ে সংক্রমণের সম্ভাবনাকে প্রতিহত করে দৈনন্দিন ও স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে। এটা ভারতবাসীর কাছে একটা বড় পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলে তবেই অর্থনীতি বাঁচানো যাবে আবার মহামারীও প্রতিরোধ করা যাবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

রেমডেসিভির কালোবাজারি , গ্রেফতার কয়েকজন , উদ্ধার রেমডেসিভির ।

দেশে ভয়াবহ মহামারীর সাথে সাথেই একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীর মদতে সৃষ্টি হয়েছে রেমডেসিভির কালোবাজারি । কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে অ্যান্টি-ভাইরা...