লকডাউনের শুরুতে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গিয়েছিল কমিউনিস্ট কিউবা করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার করল যদিও সেই কল্পিত ভ্যাকসিন আজ পর্যন্ত কোন ভারতবাসী পায়নি শেষ পর্যন্ত সবাইকে সেই ভারতের তৈরি ভ্যাকসিনের উপরেই নির্ভর করতে হল । সৎ মা কোনদিন নিজের মা হয়না এটা কেউ প্রথমে বোঝে কেউ দেরিতে বোঝে । এমনকি অনেকে দাবি করেছিল দশ দিনের মধ্যে ভ্যাকসিন চাই সামান্য জ্ঞান থাকলে জানা উচিত একটা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে ১৫ থেকে ১৮ মাস সময় লাগে কারণ ভ্যাকসিন এর কয়েকটি পর্যায় রয়েছে এবং প্রতিটি পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করতে হয় কিন্তু ভারতের বিজ্ঞানীরা দিনরাত পরিশ্রম করে তার থেকে অনেক কম সময়ে ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন সেইসঙ্গে সকল ভারতবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার চেষ্টা চলছে যে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে গিয়েছিল তাদের উদ্দেশ্যে মোমবাতি জ্বালানো নিয়েও অনেকে কটাক্ষ করেছিলেন । যারা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উৎসাহিত করার জন্য মোমবাতি জ্বালিয়েছিলেন তারা অন্ধবিশ্বাসে জ্বালিয়েছিলেন এরকম ভাবার কোন কারণ নেই । মোমবাতি জ্বালালে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়না সেটা সবাই জানে কিন্তু চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের উৎসাহিত করার কাজে লাগে । সমরাঙ্গনে সৈনিকরা যুদ্ধ করেন কিন্তু দেশবাসীকে সেই সৈনিকদের উৎসাহিত করতে হয় যাতে সৈনিকরা জয়ী হতে পারে । যুদ্ধে যোদ্ধার অনুপ্রেরণা একটা বিরাট ভূমিকা পালন করে । ভারতীয় মস্তিষ্ক বিশ্বের অন্যান্য দেশের মস্তিষ্কের তুলনায় অনেক বেশি উর্বর শুধু প্রয়োজন সদিচ্ছা, সহযোগিতা এবং অর্থ বরাদ্দ । সেই জন্য ভারত সরকারকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণায় আরো বেশি করে অর্থ বরাদ্দ ও সহযোগিতা করতে হবে এবং দেশের কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের দেশের মধ্যেই কাজ করার সুযোগ দিতে হবে । তাদের যাতে দেশে কাজ না পেয়ে বিদেশে না যেতে হয় সেটা সুনিশ্চিত করতে হবে । ভারতীয় মেধাবী ছেলেমেয়েরা বিদেশে পাড়ি দেয় বিদেশের প্রতি অন্ধ মোহে সবক্ষেত্রে এটা সঠিক নয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভারতে গবেষণা করার সুযোগ পায়না সেই সুযোগটা নেয় উন্নত দেশগুলি । উন্নত দেশগুলি কম পারিশ্রমিকে দিয়ে ভারতীয় মেধা নিজেদের দেশে কাজে লাগাচ্ছে । অর্থ ও পরিকাঠামো বিদেশের , উর্বর ভারতীয় মেধা সস্তায় কিনে নিচ্ছে তারা এবং উৎপাদিত পণ্য সারাবিশ্বে বিপুল লাভে বিক্রি করে সমৃদ্ধ হচ্ছে উন্নত দেশগুলি । তাদের উন্নতির এটাই রসায়ন ।
এ প্রসঙ্গে আরো একটি কথা বলা দরকার ভারত কিন্তু ভ্যাকসিন আবিষ্কার করার আগেই করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চলে এসেছে অথচ উন্নত দেশগুলি পারেনি সেটা চিকিৎসকদের প্রচেষ্টাতেই সম্ভব হয়েছে অথচ বিপুল জনসংখ্যা ও জনঘনত্বের দেশ ভারত । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তাঁর একটাই কাজ মাঝে মাঝে ' আরো নতুন ভাইরাস আসছে এই সমস্ত কথা বলে ভয় ধরানো 'যদিও তাঁর তত্ত্বের কোন সারবত্তা পাওয়া যায়নি অথচ করোনা মহামারী এটা সময়মতো ঘোষণা নাকরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে তার পরে ঘোষণা করা হয়েছে নাহলে ভারত তথা বিশ্ব ক্ষয়ক্ষতি অনেক এড়াতে পারতো । এই মহামারিতে ভারত যেটা প্রমাণ করলো ভ্যাকসিন আবিষ্কার করার আগে মহামারী নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে ভারত এবং ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে বাস্তবায়িত করেছে ভারত । সদিচ্ছা ও সহযোগিতা থাকলেই ভারতীয় প্রশাসন অনেক কিছু বাস্তবায়িত করতে পারে প্রমাণিত সত্য । করোনার যে নিউ স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে ভারত সেখানে প্রথমেই বৃটেনের সাথে উড়ান বন্ধ করেছে এবং যে যাত্রীরা এসেছে প্রত্যেকের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে । প্রথম করোনা মহামারীর ক্ষেত্রে ভারত একটু দেরি করে ফেলেছিল সেটাতে কিছুটা সরকারি ভবিষ্যৎ ভাবনার অভাব ছিল তবে পুরোপুরি সরকারি গাফিলতি ছিল বলা যায়না কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মহামারী ঘোষণা করেছে অনেক দেরিতে কোন কারণ না দেখিয়ে একটা দেশ আন্তর্জাতিক উড়ান হঠাৎ করে বন্ধ করে দিলে অন্য প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন