শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার আজ ১৯ বছর পূর্তি ।

আজ সেই বিখ্যাত দিনটি যেদিন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা ,দম্ভ ও গর্বকে ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছিল ওসামা বিন লাদেনের আল কায়দা ।১১ সেপ্টেম্বরের হামলা যা নাইন/ইলেভেন  নামেও পরিচিত , ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের উপর আল-কায়েদার একইসাথে চারটি সমন্বিত সন্ত্রাসী হামলা। আক্রমনে ২,৯৯৭ জন নিহত এবং ৬,০০০ এর অধিক মানুষ আহত হয়, এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক অবকাঠামো ও সম্পদ।
১১ ই সেপ্টেম্বরের হামলা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসবাদ এর অংশ ।
উপরের সারি: ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার এর দ্যা টুইন টাওয়ার জ্বলছে ।২য় সারি, বাম হতে ডান: পেন্টাগনের ধ্বসে পড়া অংশ । ফ্লাইট ১৭৫ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের দক্ষিণ টাওয়ারে আঘাত হানে ।৩য় সারি, বাম হতে ডান: ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ধ্বংসস্তুপের মাঝে একজন অগ্নিনির্বাপণ কর্মী সহায়তার অনুরোধ জানাচ্ছেন , গ্রাউন্ড জিরো থেকে ফ্লাইট ৯৩ একটি ইঞ্জিন উদ্ধারকৃত হয়। নিচের সারি:ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার বিরতিহীন তিনটি ফ্রেমে ধারণকৃত এ ৭৭ এর পেন্টাগনের উপর আঘাত হানার দৃশ্য ।
ওসামা বিন লাদেন এই হামলার নেপথ্যে ছিলেন বলে ধারণা করা হয় এবং শুরুতে তিনি তার জড়িত থাকার ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানালেও পরে তিনি তার মিথ্যা বক্তব্যকে অমূলক বলে উল্লেখ করেন। আল জাজিরা ২০০১ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর এক প্রতিবেদনে বিন লাদেনের এক বক্তব্য প্রচার করে, যেখানে তিনি বলেন, "আমি জোর দিয়ে বলছি যে আমি এই কাজ করিনি, মনে হয় কেউ তার ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য হাসিল করার লক্ষ্যে এই হামলা চালিয়েছেন।" ২০০১ সালের নভেম্বর মাসে মার্কিন সেনাবাহিনী আফগানিস্তানের জালালাবাদ থেকে একটি ভিডিও টেপ উদ্ধার করেন। ভিডিওতে দেখা যায় বিন লাদেন খালেদ আল-হারবির সাথে কথা বলছেন এবং এই হামলার সম্পর্কে তার জানার বিষয়টি স্বীকার করছেন। ২০০১ সালের ২৭শে ডিসেম্বর বিন লাদেনের আরেকটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। এই ভিডিওতে তিনি বলেন:
এটি স্পষ্ট যে ইসলামের বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘৃণা রয়েছে... এটি ক্রুসেডারদের ঘৃণা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রশংসিত হওয়ার যোগ্য কারণ এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া, যার উদ্দেশ্য হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন বন্ধ করা, যারা আমাদের লোকজনদের হত্যা করছে... আমরা বলি যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমাপ্তি আসন্ন, বিন লাদেন বা তার অনুসারীরা জীবিত থাকুক বা মৃত, মুসলিম উম্মাহ জেগে ওঠেছে।
২০০৩ সালে ধৃত হওয়ার পর খালিদ শেখ মোহাম্মদ আল জাজিরার সাংবাদিক ইয়োসরি ফুদা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন যে ২০০২ সালের এপ্রিল মাসে খালিদ শেখ মোহাম্মদ এই হামলায় তার দায় স্বীকার করেন এবং জানান তার সাথে ছিলেন রামজি বিন আল-শিভ।  নয়/এগারো কমিশন রিপোর্টের প্রতিবেদনে বলা হয় যে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার প্রধান মোহাম্মদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বৈরিতার কারণ হল ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির বিরুদ্ধে তার সহিংস অসম্মতি। মোহাম্মদ ১৯৯৩ সালের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বোমা হামলার উপদেশদাতা ও বিনিয়োগকারী ছিলেন এবং তিনি এই হামলার প্রধান বোমা হামলাকারী রামজি ইউসুফের মামা।
"খালিদ শেখ মোহাম্মদের সাবস্টিটিউশন ফর টেস্টিমনি"তে বলা হয়ে পাঁচজন ব্যক্তি এই হামলার বিস্তারিত সম্পর্কে জানতেন। তারা ছিলেন বিন লাদেন, খালিদ শেখ মোহাম্মদ, রামজি বিন আল-শিভ, আবু তুরাব আল-উরদুনি, ও মোহাম্মদ আতেফ।
ওসামা বিন লাদেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি পবিত্র যুদ্ধের ঘোষণা দেন এবং মার্কিনীদের হত্যার জন্য বিন লাদেন ও অন্যান্যদের ১৯৯৮ সালে একটি ফতোয়া স্বাক্ষরকে তদন্ত কর্মকর্তারা তার উদ্দেশ্য হিসেবে উল্লেখ করে থাকে। ২০০২ সালের নভেম্বরে বিন লাদেনের "লেটার টু আমেরিকা"-তে তিনি তাদের হামলা সম্পর্কিত আল-কায়েদাদের উদ্দেশ্য ব্যাখা করেন, তন্মধ্যে রয়েছে:

ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন

সোমালিয়ায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে হামলায় সমর্থন

মরো সংঘর্ষে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ফিলিপাইনকে সমর্থন

লেবাননে মুসলমানদের বিরুদ্ধে আগ্রাসনে ইসরায়েলকে সমর্থন

চেচনিয়ায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্রে রুশদের সমর্থন

মুসলমানদের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যে প্রো-মার্কিন সরকার

কাশ্মীরে ভারতকে মুসলমানদের শোষণের বিরুদ্ধে সমর্থন

সৌদি আরবের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর উপস্থিতি
এই সন্ত্রাসবাদি হামলার পর আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেওয়া আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। তালিবানি সরকারের পরাজয় হয় ।পরবর্তীকালে একদিন জানা যায় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যু হয়েছে । সন্ত্রাস দমনে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছিল ভারত তবে ভারতের দাবি ছিল গোটা বিশ্ব থেকে সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করা হোক কিন্তু আমেরিকা কথা রাখেনি তালিবান সরকারের পতন হওয়ার পর আমেরিকা হাত গুটিয়ে নেয় । ভারতে সন্ত্রাসবাদ বা কাশ্মীর সন্ত্রাসের কোন সমাধান তারা করেনি । এটা নিয়ে বিরোধীরা সমালোচনা করেছিল আগ বাড়িয়ে সমর্থন জানিয়ে ভারত কি পেল তবে সেসময় ভারত যদিনা সমর্থন জানাত তাহলে ভবিষ্যতে ভারত আর কোনদিন সন্ত্রাসবাদ নির্মূল এর জন্য দাবি জানাতে বা সুর চড়াতে পারতনা ।
তথ্য সহায়তায় - উইকিপিডিয়া ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

রেমডেসিভির কালোবাজারি , গ্রেফতার কয়েকজন , উদ্ধার রেমডেসিভির ।

দেশে ভয়াবহ মহামারীর সাথে সাথেই একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীর মদতে সৃষ্টি হয়েছে রেমডেসিভির কালোবাজারি । কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে অ্যান্টি-ভাইরা...